সোমনাথ বেনিয়া-র গুচ্ছ কবিতা

রক্তবাসনা
দাঁড়ি পড়বে অনুচ্ছেদে
স্নায়ুতে মন্থিত আবেগ রক্ত চায়
আলতো কামড়ে ঠোঁট, পিপাসাপ্রিয়
ঋতুর ভিতর চরম ফণার শীৎকার
রোমকূপের ঘন নিশ্বাস নখের ভাষা
আঁচড় যেখানে লালচে পথ…
কানের লতিতে দাঁত, শব্দাঘাত
পর্দা সরে গেলে লালচে ছিদ্র, নিবিড়
কুট কুট
কতরকম অতৃপ্ত, সমাপ্ত
ইচ্ছা বেঁকে গেলে মেরুদণ্ড, সরীসৃপ
কীভাবে দেখবে বুকে হাঁটার চলন
আঙুল কোমর বিছে, সুড়সুড়ি, শিহরণ
মাংসল পাহাড়ের শীর্ষ, গুঁটি, আঁশফল
রসালো নিবেদেন পতঙ্গের কুট কুট
সরুগলিতে হামাগুড়ি, ক্ষুদ্র পায়ের বিস্তার
হোক বিষ, কিছুটা সময় নিয়মের বিপরীতে…
মিথুনগাছ
আশ্চর্য নয়
মাটিতে শিকড়, পদক্ষেপ, মোহের আকর্ষণ
ছুঁয়ে দিলে প্রকৃতিপাঠ, মিথুনগাছ
এই লালসা সময়ে পুজো, শুদ্ধাচার
গুচ্ছ পাতার নিদান, ব্যাকুল আড়মোড়া
কোথায় রাখি জল!
ঝুলে আছে পতনের কামনায়
হাঁ, অর্থাৎ গ্রহণ, উত্তেজিত দ্বিতীয় মন…
অঙ্গসংশ্লেষ
চেতনার করিডোরে বুক বাঁধিয়ে বীর্যসংবাদ
এই অসহ্য কামনার তাপে ফুসফুস এলোমেলো
দৈহিক শিল্প খোঁজে অন্যসত্তা, অন্যপ্রজাতি
অন্ধকার শিরোনামে অঙ্গসংশ্লেষ দ্বিধা পেরিয়ে…
নধর শব্দে চোখের পাতা বন্ধকনামা
আদিম প্রবৃত্তি বোঝে শালীনতা, অর্থহীন
গোপন বোঝাপড়ায় আলো থাকে না
স্নায়ু ঝিমায়, পিছলে যাচ্ছে বিজাতীয় সংরাগ
লুকোছাপা
দৃষ্টি খোঁজে ছিদ্র, সব ছিদ্র অবৈধ
অযাচিত নেশা, সাময়িক পেশা, পর্যবেক্ষণ
ক্রিয়া, আনন্দের বিক্রিয়া, পোশাকমোচন
মাথার ভিতরে ঘোর, শরীর বিভোর, লজ্জাচ্যুত
প্রতিনিয়ত চোখ, পীড়িত স্পন্দন, অবিচল
কোথাও দানা বেঁধেছে বিকৃতি, ক্রোমোজোম
শিথিল হয় হাতের বিবিধরেখা, মজার পাহাড়
লুকোছাপা জানে, দোষের দৈর্ঘ্য নেই, পলাতক…
অপত্যকামনা
নাভিফুল ছিঁড়ে এই পরিণাম
অবচেতনে মেনে নেওয়া দৃষ্টির অকালমৃত্যু
বোধ কতটা ক্ষয়ে গেলে আদর্শ হারায় পথ
সমস্ত শরীরে আদর, সে তো অপত্যস্নেহ নয়
নিশ্চুপ থেকে ভাষা মিলনের আবেগে ভাসে
এই খেলায় পাপের অধিকারবোধ পুণ্যের উপরে
তারপরও কোনো খেদ নেই, শুধু অপত্যকামনা
সব কিছু অলীক মেনে পুনরায় প্রস্তুতি নেওয়া…
0 Comments