তিনটে কবিতা

সোহেল ইসলাম on

১.
ডাস্টবিনে, আঁস্তাকুড়ে
ভাত খুঁজছে লেনিন কোনও
ট্যাক্সি এসে মেয়ে তুলছে
কানুন তোর হাত গুটানো

মায়ের চোখে মাতাল স্বামী
মুখের কাছে শুকনো ঠোঁট
বাচ্চাগুলো ভাত খুঁজছে
মাইক বলছে আবার ভোট

ভোট এলেই রাজার ভোজ
স্কুল মাঠে লম্বা ভিড়
বড্ড জ্বালা খিদের থাবা
বুঝবে কবে রাজা-উজির

ও উজবুক,বুঝবি কবে ?
ভোট এলেই উড়বে টাকা
সারা মুলুক চুলোয় যাক
রাজ্য মানেই কলকাতাটা

২.
রঙ যখন লাগল গালে
গাছের ডালে
কোকিল কেন মুখ ফেরাল

রঙ যখন শূন্যস্থানে
গলির কোনে
আবার কেন খুঁজতে এল

খুঁজতে এল আবির মাখা
জড়িয়ে থাকা
সুখের ছোঁয়া অনুভূতির

আজকে আমি রঙের দেশে
একলা বসে
নিজের গালে মাখছি আবির

কোথায় গেলে দুপুর রোদে
একটু কেঁদে
হালকা হবে পাগল মন

চোখের জলে যাচ্ছে ধুয়ে
আবির ছুঁয়ে
কে ভাঙাবে এ অনশন ?

৩.
এমন ভাবে বিকেলগুলো
হারিয়ে যাবে
ধুলোর ঝড়ে ?

একেকদিন কবিতা লিখে
শুনিয়ে গেছি
রঙ বাহারে

সব তাহলে মিথ্যে হল
সামনে বসে
প্রথম দেখা

তুমি তখন গঙ্গা ফড়িং
নদীর বুকে
সাঁতার কাটা

কথার ভাঁজে রবিঠাকুর
কখন এসে
পাতত পিঁড়ি

তোমার পাশে আমি এখনও
হেঁটে চলেছি
আকাশসিঁড়ি

বৃষ্টি ঝরে পড়তে দেখে
ভিজিয়েছিলে
পায়ের পাতা

সেই মেয়েটা নৌকো করে
ভাসিয়ে দিলে
গানের খাতা

বলতে গেলে রাগ দেখাও
ফিরিয়ে নাও
টুকরো রাগ

জলের নিচে ক্লান্ত পাথর
আমার মতই
ভিজতে থাক ।


ফেসবুক অ্যাকাউন্ট দিয়ে মন্তব্য করুন


সোহেল ইসলাম

জন্মঃ ১৯৮৫ সালের ১লা মে । ২০০১ থেকে লেখা শুরু। প্রথম লেখা ব্যাক্তিগত না পাওয়া থেকে।তারপর দেখেছেন শুধু নিজে নয় হাজার হাজার মানুষ না পাওয়ার পুকুরে গলা জলে ডুবে যাচ্ছে,ডুবে আছে, তাদের কাছে নিজেকে দাঁড় করানোর জন্য লেখা। কবির মতে লিখলে ,না বলা গুলো, না বোঝাতে পারা গুলো বলতে পারেন। কবিতা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, "সবাই প্রতিরোধ শিখুক,প্রতিবাদ শিখুক,নিজের দাবি নিজেরাই জানাতে শিখুক।কেউ কারুর কান্না কেঁদে দেয় না।রাজস্থানের গ্রামে রুদালি ভাড়া পাওয়া যায়,কিন্তু আমাদের রুদালি আমরাই হব।কাউকেই এক ছটাক জমি ছাড়বো না।" প্রিয় কবিঃ রঞ্জন আচার্য, রানা রায়চৌধুরী। প্রিয় বই : সম্পর্ক। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ - আব্বাচরিত। উত্তর দক্ষিণ , নাটমন্দির , কবিসম্মেলন , কৃত্তিবাস ও ছোট বড় বিভিন্ন পত্রিকায় নিয়মিত লেখেন।

0 Comments

মন্তব্য করুন

Avatar placeholder

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।