হৃদয়ে রবীন্দ্রনাথ

সেই কবে শাল মুড়ি দিয়ে
কোণে বসে ফসল কুড়োনো শুরু ,
তারপর জীবনের ‘সহজ পাঠ’ পেরিয়ে
পা ফেলেছি কঠিন গদ্যে ।
দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর জীবনের
হেঁটে চলা পথে
অবিচ্ছেদ্য ছায়ার মত
থেকে গেছে সব , অলক্ষ্যে ,
বুঝিনি ।
বুঝিনি , কখন অহংচক্ষু খুলে গিয়ে
ছুটে গেছে ব্যস্ত সময় ,
আরো আরো দূর যেতে হবে বলে
দূর নির্বাসনে পাঠিয়েছি সব ।
তবুও, আঙুলের ব্যবধান গলে
বেশ কিছু দুর্লভ রাত খসে গেলেও
কিছু অনাবিল সকালের নির্যাস
রয়ে যায় করপুটে
রেখায় রেখায় ;
সেরকমই কিছু অনুপম মুহূর্তে
যাবতীয় ব্যস্তযাপন ও নাগরিক খোলস ভুলে
যখন এসে দাঁড়াই কোন
অচেনা উড়ালপুলের কিনারে ,
কান পেতে শুনি
দূরাগত কোন ট্রেনের হুইশেলে
মিশে যাচ্ছে অন্য এক সুর —
বিস্ময়ে দেখি
আদিগন্ত সবুজ মাঠ
আর ঝলমলে একটা আকাশ নিয়ে
মনের ভেতর জেগে উঠছে এক বর্ধিষ্ণু গ্রাম ,
মেঠো আলপথ ধরে
একতারা হাতে হেঁটে আসছেন
দীর্ঘশ্মশ্রু এক অক্ষরপুরুষ —
তাঁর কান্তিময় আলোয়
ধুইয়ে দিচ্ছেন সমস্ত চরাচর ।
আলোয়-স্নাত সেই বিশ্বপারাবারে
আমৃত্যু আমাদের অনন্ত অবগাহন ।।
0 Comments