উল্টো গুণিতকেরা একা

পিয়াংকী on

ulto_gunitokera_eka

পাঁচ

“প্লিজ পাঁচমাথার মোড়ে দাঁড়াবেন”।
জলের ফোঁটাতে জন্মের আঁকিবুঁকি, অযথা বেড়ে চলেছে দায়।মাত্র পাঁচহাত দূরত্ব ।ঘুরেফিরে এসে সেই অন্ধ ভিখারি ।সেই গোধূলি, সেই হলদেটে মাখনরঙের মেঘ,
ভুলিয়ে দেবার জন্য শুধুমাত্র জন্মগত কিছু দড়ি টানাটানি, হিসেব আর একটা পাঁচ মিনিটের কনভার্সেশন

পরেরটুকু একান্তই ব্যক্তিগত গদ্য

চার

“চারপাশটা দেখে নিন, ভুলচুক পার্সোনাল “
কথাতে কথাতেই বোবা হয়ে যাই, যতটা না তোমার পুকুরে ডুবে যাওয়া তার থেকে দ্বিগুণ একাকিত্ব নিজের জিরোওয়াট ল্যাম্পে খাবি খাওয়াতেই । এই আসা-যাওয়া আর ভেসে ওঠার ঠিক মাঝ বরাবর চারগজ লালফিতে চোখে চালশে।চল্লিশের ঘরে গেলে এসব নাকি স্বাভাবিক
চতুর্মাত্রিক যা কিছু সে সবেতেই তুমি পর্দা দেখতে পাও আর আমি চুনকাম না করা এবড়োখেবড়ো দেয়াল

রাত কমতে থাকলে আমাদের খিদে বাড়ে

তিন

“তিন তিরিক্ষে নয়, কীইই তিরিক্ষি মেজাজ”

তোমাকে একদিন দেখেছি তিনমূর্তির স্ট্যাচুর নীচে, আরেকদিন বাসস্ট্যান্ডের ভীড়ে। স্ট্যাচু অফ লিবার্টিতে হলুদ চোখ চামড়া ওঠা ঠোঁট আর একটা কবিতার বই হাতে দাঁড়িয়েছিলে, ওটাই কি তুমি? চোখে ঠুলি পড়েনি বোধহয়, এখনো চরিত্র খুঁজতে গেলে ওই স্ট্যান্ড আর স্ট্যাচুর নামে গুগল সার্চ করি

এভাবেই বয়ে যায় যত না-করা-উচ্চারণ

দুই

” জোড়া শালিক দেখলে দিন শুভ হয় যেমন তেমনই সঙ্গম নিয়ে বিতর্ক রয়েছে “

আসলে আঙুলের আড়ালে মেঘের অভিমান দেখে থমকে যায় যৌনতা। প্রেমিক আসে।ভিজিয়ে দেয়, আপেলে দাঁতের দাগ বসানোর আগে ধুয়ে নিই যাবতীয় অভাব। পাতে শোক বেড়ে দেবার থেকে পায়ের নূপুর সাজিয়ে দেয়া অনেক শ্রেয়.. এটা ভাবতে ভাবতেই হুট করে নির্ধারিত স্টেশন এসে যায়।
দুয়ে দুয়ে চার মেলানোর আগে সিটে ফেলে আসি দোপাট্টা

দু’চোখ কম পড়ে যায়, তোমাকে দেখার জন্য চশমা পরি বাধ্যতামূলক

এক

“একের সাথে যোগাযোগ নেই বহুকাল “
মশারী টাঙালেই জোনাকি আসে।উল্টে দেয় খাট, জলে জলাকার হয়ে যায় ঘর। সমুদ্র খুঁজতে এসে বসে থাকি বালিয়াড়ির পাশে।ওদিকে থৈথৈ জলে তোষক বালিশ চুপসে একাকার,
একের ঘরের সব্বাই মৌলিক, শুধু তাদের সঠিক অবস্থান প্রয়োজন

একঘর লোকের সামনে নামতা পড়তে পড়তে হারিয়ে ফেলি একাকিত্ব

শূন্য

“শূন্যের কোন গুণিতক নেই”

শুধু কিছু অসংজ্ঞাত মূকাভিনয় আছে যারা মহল্লায় মহল্লায় নামসংকীর্তন করে আর ছিটিয়ে দেয় রোদ


ফেসবুক অ্যাকাউন্ট দিয়ে মন্তব্য করুন


পিয়াংকী

পিয়াংকী মুখার্জি। লেখালেখি করেন "পিয়াংকী" নামে। ভারত বাংলাদেশ সহ পাশ্চাত্যের বিভিন্ন ম্যাগাজিনে তার কবিতা প্রকাশিত হচ্ছে প্রায়শই। কাজ করতে ভালোবাসেন মুক্তগদ্য নিয়ে। নতুন ধারার মুক্তগদ্য প্রকাশিতও হয় বিভিন্ন পত্রিকায়। কবিতার জন্য পেয়েছেন বিভিন্ন স্বীকৃতি। কবিতা ক্লাব থেকে পুরস্কার, যুগসাগ্নিক সেরা কবি সম্মান, কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় দ্বিতীয় পুরস্কার তার মধ্যে অন্যতম। প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ 'মধ্যযামের আলো'।

0 Comments

মন্তব্য করুন

Avatar placeholder

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।