দিলীপ মাশ্চরকের কবিতা
বর্ণমালা
কী করে তোমাকে লিখি
শর্তহীন , দিবাস্বপ্ন ছাড়া ?
ইশারা , সংকেত আছে , ছাদ নেই
পুরনো বাটির মতো পড়ে আছে উপুড় সংসার
কী করে তোমাকে লিখি , বলো
পরজন্ম , মনে হয় চেনা
পায়ের পাতায় ভাঙে শতছিন্ন পাড়
কাচের মতন আলো , অবসন্ন বেলা
জারুলের গন্ধ মেখে ঘুরে আসে
বিষণ্ণ বাতাস
পাথরে নিহত স্রোত ,
ডুবে যায় প্রিয় বর্ণমালা …
কবেকার স্পর্শগুলি
দিনান্তে ছায়ার মতো অন্ধকার নেমে আসবে , জানি
সমস্ত শরীর জুড়ে ক্ষতচিহ্ন ,
গর্ভপতনের পর
ছিন্নমূল , দাঁড়িয়ে রয়েছ
অশ্বথের রুগ্ন ডালে সন্তাপের মতো
মিশে আছে অগ্নি ও মেঘ
সকলেই চলে গেল পর্ণমোচী অরণ্যের দিকে
প্রতিশ্রুতির মতো খরস্রোতা নদী
বালির চড়ায় মগ্ন ভালবাসা …
কবেকার স্পর্শগুলি ভেসে যায় ঢেউয়ের ভিতরে
মাধুকরী
জানি তুমি তারাফুল , মায়ার ওপারে
আকাশগঙ্গায় থাকো ,
তবু কোনও বিনম্র দুপুরে
অন্ধ আলোর মতো
নেমে আসো বারান্দায় , বসন্তবৌরি
রেখে যায় ভাঁজ-করা চিঠি
আমাকে নেবে না জানি তোমার মন্দিরে
পাশে শান্ত মসজিদ , ত্রিপাদ ভূমির মায়া
থেকে যায় , কালের রাখাল আমি
এইমতো বাইরে বেরিয়ে পড়ি
তর্জনীতে বাঁধা আছে সুতো ,
তোমাকে প্রদক্ষিণ করি
যেন গ্রহ , সৌরলোক , একটি আলোর কাছে
মাধুকরী , সমস্ত জীবন
0 Comments