আলোলেখা

সন্দীপন দত্ত on

alolekha

১.

যা কিছু ভালো, যা কিছু মঙ্গল, যা কিছু শুভ- আমি সেটুকু দেখতে চেয়েছিলাম। আমি ভুলে গেছিলাম তোমার হাসি দেখলে তোমার ভাঙনও দেখতে হবে। দ্রষ্টব্য টিপের পাশে তোমার চিৎকারও সত্য। এসব সত্যভাষণে এখন মন ভালো হয় না। এখন বারুদকাল। আমাদের জল প্রয়োজন। আকাশভাঙা। সমস্ত সত্তা জুড়ে প্রয়োজন কোনও অলৌকিক ভালোমানুষী। তেমন কঠিন নয়। দেখো আমি সহজেই তোমার ছবির দিকে তাকাই এখনও। তাকিয়ে থাকতে থাকতে আমার মনে তৈরি হয় স্বপ্নবাক্য, মায়াশব্দ। তৈরি হয় বিষাদবিচ্ছেদের আশা। আমি তোমার কথা খুব করে ভাবছি প্রিয়। এইসব অর্বাচীন ভুল পেছনে ফেলে ফেলেই আমরা এগোই। এক ধ্বংসস্তুপ থেকে আরেক সভ্যতার দিকে। আমি তুমি আমরা তোমরা থাকি না। সে তারা তাহারা তো থাকে। একটা বিন্দুকে আলতো চাপ দিয়ে টেনে নিয়ে গেলে রেখা সৃষ্টি হয়। সংজ্ঞা অনুযায়ী রেখা অসীম পর্যন্ত যায়। আমাদের শুধু কাগজ নেই। তাই বলে কি আঁক না কিছুই? মাটির ভেতর সম্ভাবনার মতো থেকে যায় ইতিহাস। একদিন তোমায় নিয়ে আসব বাড়িতে। এটুকুই তো আমাদের চালিয়ে নিয়ে যায় অর্ধেক জীবন। বাকি অর্ধেক সেই বাড়িটা বানানোয়। আমরা ভালো নেই। কেউ কোনওদিনই ছিল না। তবু একদিন কুশল বিনিময় একটি সত্যি ঘটনা হবে। তোমার ভাঙনের পাশে টিপের মতো। টিশার্ট ও টিপের মারাত্মক সহাবস্থানের নাম বেঁচে থাকা।

২.

প্রতিবেদনের ভাষায় প্রেম লিখতে চাইছি। হয়তো শেষ পর্যন্ত ঐ একটা ভাষাই টিকে যাবে। প্রতিবেদনের। নালিশ আমাদের জন্মগত অভ্যাস। সেই একই ভাষায় প্রতিবেদন লেখা হয়। সংবাদ পড়া হয়৷ আমি নিশ্চিত কবিতাও ওভাবে পড়া হবে একদিন। সমস্ত লেখা প্রতিবেদন হয়ে যাবে৷ আমরা কেবল জানতে ও জানাতে ভাষা ব্যবহার করব। প্রয়োজনের বাইরের পৃথিবী আত্মহত্যা করলে আমার খুব মনে পড়বে আপনার খোলা পিঠের কথা। আমি একজনের কাঁধকে নৌকা ভাবি। আপনার পিঠ অনেকটা ভেলার মতো৷ কাঁধে কিছু চুল রাখুন। সিক্ত। জল নামুক শিরদাঁড়া বেয়ে। নামতে নামতে একসময় ভুলে যাই শহরে পৌঁছে গেছি। সমতলে এলে আমার মনে হয় এখানে এত মানুষ কেন? সেই প্রতিবেদকভর্তি পৃথিবীতে কেউ কাব্যি করে কথা কইলে তার শাস্তি হবে কঠোর। অথচ কবি শাস্তিকে ফুল ফোটানোর ছল হিসেবে দেখে। নির্জন ঘরে বসে স্বপ্ন দেখে সুশব্দের। কান যদি সঠিক উচ্চতায় নাচে তবে ভারসাম্য বজায় থাকে শরীরের। আমরা অবসর ফুরিয়ে ফেলছি বনভোজনের ষড়যন্ত্রে। কোমরের কাছে একটা তিল এঁকে দিলে নিজেকে সম্পূর্ণ শিল্পী মনে হবে। কিন্তু সম্পূর্ণের ভেতর কোনও আলো নেই। শুধু রোদ আছে। সেমি কোলনের মতো কথারা এখানে চুপ করে আছে। ফুরোয়নি৷


ফেসবুক অ্যাকাউন্ট দিয়ে মন্তব্য করুন


সন্দীপন দত্ত

জন্ম : ০৯ই ফেব্রুয়ারী,১৯৯৩। শিলিগুড়ির বাসিন্দা। ২০১৪ সালে প্রথম কবিতা প্রকাশ। লিটল ম্যাগের কাজের সঙ্গে যুক্ত। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের জলপাইগুড়ি ক্যাম্পাসে বাংলা স্নাতকোত্তর পাঠরত।

0 Comments

মন্তব্য করুন

Avatar placeholder

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।