বিষ বাগিচায়

সিদ্ধার্থ দাস on

                                                                এক

        … একটা প্রশস্ত রাস্তায় নামলাম । এতদিনের জল-কাদার জামা ছেড়ে মাটির উপর উঠে আসা বলেই রাস্তার গল্প।

       আগে গাছের কথা বলি-
দু’ধার দিয়ে দাড়িয়ে দেখতে দেখতেই ক্রমশ উপরের দিকে একে-ওকে ধরাধরি করে এগিয়ে চলেছে।
এবার মাঠ-
নিপাট আরামদায়ক ভঙ্গিতে শুয়ে শেষ হওয়ার আশায় দূরে … ঝোপঝাড়ে মিশে গেছে।
তারপর আকাশ-
ঝোপঝাড়ের ঠিক পেছনে শুরুটা অনেক দূর থেকে, হালকা অবুঝ-আলো হয়ে ঘন কালো ভাবে ডাইনে-বাঁয়ে যতদূর চোখ যায় …

       … (এখানে একখানা স্তবক আছে)।

       চড়াই ঠেলে অনেকটা আসা হল। মনে হচ্ছে রাস্তাটা সামান্য বাঁক নিয়েছে ডাইনে । আহ্ঃ কি বাতাস …। একটা গান।
হঠাৎ …
হঠাৎ একটা মা।
মা ! দাড়িয়ে আছে ! রাস্তাটা বাম দিকে বাঁক নিল।

       এখন বাতাস যথেষ্ট ঘন । হাটার গতিটাও বেড়েছে । রাস্তাটা একটু ঢালু বোধ হচ্ছে। কিসে যেন একটা হোঁচট খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়লাম । উফ্ …
আকাশটা মাঠটাকে জাপটে চেপে ধরল। মাঠ উবু হয়ে পিঠ দিয়ে আকাশকে যতদূর সম্ভব উঁচু করে রাখার চেষ্টায়। মাথা তোলার সামর্থ্য নেই, হামাগুড়ি …। প্রত্যেকটা গাছ উলঙ্গ মানুষে থিকথিক। মাথার উপরেও একই অবস্থা, ডালের আদলে। পাতা উধাও।
ছুটছি …
রাস্তাটা ঢালু … আরও ঢালু । পায়ে বল নেই একদম।
গড়াচ্ছি …
গড়িয়ে যাচ্ছি …

       পেছনে সবকিছু হুরমুরিয়ে ভেঙ্গে পড়ছে । আকাশ , মাঠ , মানুষ-পালা …। সব।
আর মাটি নেই । পড়ে যাব , পড়েই যাব …। নিজেকে আটকানোর কোন অবলম্বন নেই। কিছুই তো নেই …।
সকলই ভঙ্গুর। মাটি সরে গেছে।
পড়ছি …
পড়ে…
যাচ্ছি …
মহা শূন্য। কোথায় এলাম …! মাথা কাজ করছে না …। 
ঘামছি , ঘামছি …। ভিজে গেছি ।
মরে …
যাব … !

                                                                     দুই

       এটা একটা জংলী কর্দমাক্ত জলাশয়। এখন শরীর আছে বোধ করি না। হাত,পা,বুক,পেট… কিছুই না। স্পাইনাল-কডে গুরুতর আঘাত , ভার্টিব্রার ডিসপ্লেসমেন্ট। কিন্তু যন্ত্রণা কই ?

      ওটা কি ?
কি একটা ভাসছে জলের উপড়ে
ওহ্ …
গন্ধ …
অসহ্য গন্ধ …

      বমি ।

ফেসবুক অ্যাকাউন্ট দিয়ে মন্তব্য করুন


সিদ্ধার্থ দাস

জন্মঃ ১৯৮৭ সালে। শৈশব ও বেড়ে ওঠা দক্ষিন দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট শহরে। ইতিহাসে স্নাতকোত্তর হলেও সাহিত্যের প্রতি রয়েছে বিশেষ অনুরাগ ।লেখালেখির শুরুটা অনেক ছোট বেলায় একটা মৌমাছির গল্প থেকে, যেটা পড়ে মা বলেছিলেন- বাহ ,দারুন হয়েছে। তারপর চলেছে স্কুল ম্যাগাজিন থেকে লিটল ম্যাগাজিন থেকে দু'একটা দৈনিক পত্রিকায় লেখার কাজ। সকলই বন্ধু বান্ধবের হাতে হাত রেখে। এছাড়াও ছবি আঁকতে ভালবাসেন। রঙ এবং শুধুই রঙে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। মুলত আঁকেন বিমূর্ত চিত্র।

0 Comments

মন্তব্য করুন

Avatar placeholder

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।