মণিশংকর বিশ্বাস-এর একগুচ্ছ কবিতা

উপকথা
এই দেশ একদিন পালিতপুত্রের কাহিনীতে ভরে যাবে
ওড়ে তুঁতছাই, পুঞ্জাক্ষি— প্রতিসরণের মর্মে যে ফল
তার ত্বক ছিন্ন সমকামে
বহুস্তরীয় মেঘের কাছে আকাশ প্রতিশ্রুত, নীল
দর্পণের গায়ে তাই আজ রক্তদাগ
বিম্ব, পালিতপুত্র তুলে ধরে পানপাত্র, অস্ত্রের সম্মান
একটি ভারতীয় বিবাহ
বৈশাখ যৌনতা ও ষড়যন্ত্রের মাস
সোনাই যৌনতার নিকটতম ধাতু
যেভাবে গোধূলি ষড়যন্ত্রের
যুদ্ধ আক্রান্ত আহত অশ্বের মতো
যৌনষড়যন্ত্র থেকে মাথা তোলে
সোহাগ দানা, অহেতু সার্কাস
ট্যাক্সিডার্মি
শূন্যে দোল খায় মৃত পাখি—
জীবিতের মতো তারও কিছু অচরিতার্থতা আছে
আছে খড়, পায়ুদেশে সূঁচদাগ—
লোকদেখানোর সামাজিক সার্থকতা বোধ
তাই সে এবার আগুনকে খড়কে
মৃত্যুকে ঘৃণা করে চলে যাবে
অনন্ত শীতের বনে
কাচের দেরাজ যাকে ভাবো তুমি।
মেয়েটি
বহুদিন উপেক্ষার পর, দুঃখ এসেছে আবার—
পৌরসভা থেকে দূরে
পরিত্যক্ত বাড়ির জানালা চেপে ধরা কচুবন, জলাঘাস…
মাথার উপরে তার যেরকম অনিবার্য একটি প্রান্তিক মেঘ—
দলছুট, ওরকম একটি মেয়ে—
কবেকার ঘুঘুর ডাকের মত কোমল নির্জন
যে আমাকে দুঃখ দিতে কখনো চায়নি
তবু তার চোখের দিকে চেয়ে থেকে
সম্ভাব্য অসম্ভবকে চিনে ফেলে
দুপুরের নরম বাতাসে টগর ফুলের গাছ থেকে
বাড়িটির ভাঙ্গা চাতালের ’পরে ঝরে পড়ছে বিষণ্ণ সাদা ফুল
আমার দুঃখের আলো…
বুনোফুল
সন্ধ্যার আকাশে
বুনো ফুল আসে
এমন ব্যাকুল
চাঁদের আঙুল
এক ঝাঁক পাখি আঁকে
মেঘেদের বাঁকে
পাখি উড়ে যায়
সকলি হারায়
সব হারানোর ফাঁকে
শুধু ফুলগুলি থাকে
এই নিরজন আলো
তোমার মুখের ভালো
সন্ধ্যার আকাশে
বুনোফুল হাসে
0 Comments