ডায়েরি
ব্যাকরণ ভাঙবার মত আমি তোমার ঠোঁটে ঠোঁট
রাখবো
তারপর বহুবার লোকালয়ে বাইসন আসবে
মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যাবে
পুতুলনাচ
সন্ধিপ্রস্তাব উড়িয়ে দিয়ে এই বিচ্ছেদ মেনে
নাও
জাহাজডুবির গল্পে টেনে আনো
শ্লোক আর আমি দেখে
নিতে থাকি অতলান্ত ক্লিভেজ
-------------------------
শ্লোক
মাঘমাসের শীতে ভাল্লুকের লোমের জ্যাকেট
পড়ে
বাইশ বছর পরে আমার সাথে দেখা করতে
আসছো
তখন বাওকুমটা বাতাসের গান শুনছি
হাতিমাহুতের সঙ্গে ঘুরে বেড়াবার পরিকল্পনা
করছি
তোমার চোখে সানগ্লাস।
বাইশ বছর বাদে তোমার সঙ্গে দেখা না করে
আমি চলে যাচ্ছি ঘাসবনের
দিকে
-------------------------
এলিজি
তিন জানুয়ারী থেকে আমাকে আর পাবে না
তুমি
তিন জানুয়ারী থেকে হত্যাদৃশ্যের সামনে ঠায়
দাঁড়িয়ে থাকবো
আমার জীবনে তুমি এক বিষ্ময়
আমার জীবনে তুমি এক সাংঘাতিকরকম
পরাজয়
কিছু কিছু বাদামী চুল
সাজানো দাঁতের সারি
কতবার ক্ষমা চাইবে একজন
মানুষ!
তোমার চোখে কোনো জল নেই
তোমার চোখে কোনো জলযান নেই
বোবাযুদ্ধের দেশে এখন উড়ে যাচ্ছে টুপি
ও
করমর্দন
---------------------------------------
সম্পর্ক
'দূরে সরে যাওয়া নদী হয়ে যাবে হয়তো
একদিন'
গাছের ছায়া মেখে দৌড়তে থাকা হরিণ
মনে হয় তোমাকে
শপিং মলে সেজে ওঠা এই শহরে খুব
মনখারাপ নিয়ে ঘুরে বেড়াতে থাকি
টাইট জিনসের মেয়েরা
বাদাম ভাঙছে
পিঁপড়েদের পদযাত্রায় আমি অংশ নিই
না
বজ্রপাত ও বৃষ্টির ভেতর আমি কেবল
তোমার হাতঘড়ির দিকে তাকিয়ে
থাকি
------------------------------------------
জাদু
ধরা যাক গোটা কুড়ি বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে
তুমি আমি একটা জাদুঘরের ভেতর ঢুকে
পড়ছি
ফাঁকা রাস্তায় মার্বেল খেলছে চিয়ার
গার্লস
পাথরের হাতকুঠারে তোমার উষ্ণ নিঃশ্বাস
মজার কথায় আজকাল হাসো না আর
তুমি
লগি ও বৈঠা নিয়ে চলে যাও ভোরের নদীর
কাছে
জাদুঘরে রাখা থাকে ডাইনির চুল
সুক্ষ হারপুন আর এস্কিমোদের ধূসর
স্লেজগাড়ি
তোমার করতলে হাত রাখলেই কথা বলতে থাকে
শহরতলি
--------------------------------------------
টিপ
আমার জীবনে তুমি খানিকটা গোপন ইস্তেহারের
মত
তোমার দুই ভ্রু’র মাঝে বসে আছি খয়েরি
টিপের মত
শহরের সবচেয়ে উঁচু টাওয়ারে ঝুলিয়ে
রাখা তোমার বায়োপিক
যেখানেই যাও, সে খেঁজুরবন বা সুপারির
সারি
ঘুম ও ঘামের মত তোমাকে অনুসরণ করতেই
থাকবো আমি
---------------------------------
ঠোঁট
আমি কেবল দেখেই চলি তোমার চিবুকের
তিল
'যুবতী পড়েছে সানগ্লাস'
আমি তো জানি খুব জমিয়ে রাখছো রাগ
আজকাল
পাটক্ষেত ও পরজন্ম নিয়ে আপাতত
মেতে আছি
দুরন্ত ডাহুক হয়ে তুমি যখন রেলগেট
পেরোও
তোমার ঠোঁটে তখন লণ্ঠনের আলো
ছায়া ও আবছায়ায় তোমাকে দেখি
আর গোলাপী হতে শুরু করে আমার
গাল
---------------------------------
দুপুর
ভাঙা দুপুরের খোলে একটু শুধু ঘুমোতে
চেয়েছিলে তুমি
বিনির্মাণ পর্ব জুড়ে নাচ,সাদা মাকড়সা
ঘুরে ঘুরে সংগ্রহ করি পাখির হাড়
এই জল বেড়ে যাওয়া নদী ও বসতিতে
আসতে চাইছো তুমি
আমাদের চোখের সাদায় মৃত এক শহরের
ছবি
মোমের পুতুলের পাশে তোমার আঙুল
চারপাশে ছেঁড়া বিকেলের
লিরিক
নিরালায় থাকি।নিরিবিলি হই।
---------------------------------
বল্লম
ডাকনাম বসিয়ে রেখেছো দু'চোখে
গঞ্জ থেকে দূরে থাকি
ব্যথা ও বেদনার মত সব
কাঠপুল
পৃথিবীর সব বল্লম কিন্তু রক্তমাখা
নয়
--------------------------------
৩রা জানুয়ারি , ১৯৭০ সালে জন্ম। কবিতার পাশাপাশী ভিন্ন্যধর্মী গদ্যও লেখেন।লোকগান ও সাবল্টার্ন বিষ্যে আগ্রহী।স্বপ্ন দেখেন হলুদ খামারবাড়ি,সাদা ঘোড়া ও আবহমানের এক জীবন।
প্রকাশিত বইঃ
যাপন চিত্র,
শোক ও শ্লোকের দিনলিপি,
বিবাহবাজনা,
তন্ত্রপুস্তক,
সাদা ঘোড়া ও লোকপুরাণের কবিতা,
নাচঘর,
নির্বাচিত কবিতা,
বিবাহ বাজনা,
মাসুদনামা।
প্রতি সপ্তাহে উত্তরের একজন তরুণ কবির সাথে পরিচয় করিয়ে দেন আজকাল পত্রিকায় " কবির সঙ্গে , কবিতার সঙ্গে " কলামে ।
সুমেধা বোস’কে আদতে হাওয়ায়-জলেভেসে ভেসে বেড়াচ্ছেনবিশ্বাস ও তার ঘাতকেরা আপনার ও আমার মধ্যেদুরপাল্লার গাড়িঘোড়ার হট্টোগোলের মধ্যেঅজাতশত্রু পীরবাবার শয্যায় হঠাৎ-ইঘাতকেরা ছায়া ফেলতে পারেন আপনি সাবধানসুমেধা বোসআপনার সাথে হওয়া অবিচারের কথাকোনো বুম থেকে উড়ে গিয়ে সরাসরি সম্প্রচার আরও পড়ুন...
0 Comments