নাগরদোলা

কাল ক্রিসমাস। অফিস থেকে ফিরতেই রুপার্ট ছুট্টে এসে রবিনকে বলল, “ড্যাডি ড্যাডি! আমার একটা গিফট প্যাকেট এসেছে অ্যামাজন থেকে! একটা টয়, ফর মি! থ্যাঙ্কিউ ড্যাড!”
রবিন ডি মেলো ঘেমো জামা খুলতে পারলে বাঁচে। তবু হাসিমুখে জুতোটা খুলতে-খুলতে সে বলল, “কী টয়? কে পাঠাল, আমি, না স্যান্টা ক্লজ?”
রুপার্ট ফোকলা মুখে হাসল। বলল, “ইটস য়ু ড্যাড! আই নো! আই লাইকড ইট আ লট!”
ওয়ার্ড পাজলের একশটা পিসের খেলনা আড়াইশো টাকায় ফ্ল্যাশ সেলে বিক্রি হচ্ছে দেখে অর্ডার দিতে দেরি করেনি রবিন। পাঁচ বছর বয়েস হয়ে যাবে কাল ছেলেটার। বড় হয়ে যাচ্ছে। যাক গিফট পছন্দ হয়েছে তার। রবিন মনে-মনে খুশি হয়ে বলল, “ওকে আই অ্যাম অফ ট্যু শাওয়ার। তারপর খেলব, ওকে?”
স্নান সেরে বেরিয়ে ডোরাকে হেঁকে কফির কথা বলল সে। তারপর ড্রয়িংরুমে আসতেই তার চোখ স্থির হয়ে গেল। ভয়ে, বা, বিস্ময়ে।
মেঝে জুড়ে একটা খেলনা নাগরদোলা। বনবন করে ঘুরছে চাকাটা। মোট পাঁচ জোড়া পুতুলের মতো বাচ্চা আর তার বাবা বা মা বসে আছে সেটায়। ঘুরছে। ঘুরছে। খুব জোরে ঘোরাচ্ছে রুপার্ট…
অ্যামিউজমেন্ট পার্কে, এমনই একটা নাগরদোলায়, সে আর বরিস…খুব জোর ঘুরছিল তখনও…হাত ফসকে গিয়ে…বাঁচাতে পারেনি…
খুব শান্ত চোখে রবিন ছেলেকে কোলে তুলে ঘর থেকে বের হয়ে এল বাইরে। রুপার্ট অবাক হয়ে বলল, “হোয়াট হ্যাপেন্ড ড্যাড?”
কিছু না বলে রবিন অ্যামাজন অ্যাপে অর্ডার রিটার্ন ডকেট করল চুপিচুপি। ছেলেটাকে আরো একটু জড়িয়ে ধরে মনে-মনে বলল, “লং লিভ মাই সন!”
0 Comments