নীল দরজা
দরজাটি আর কোন রকম আকর্ষণ তৈরী করে না আজকাল। জীর্ণ, শীর্ণ, এখানে ওখানে রঙ চটে যাওয়া, দেয়ালের দৃঢ় গাঁথুনি থেকে অনেকাংশেই নিজেকে মুক্ত করে নেয়া স্বপ্ন-নীল রঙা দরজাটির কোন জৌলুসই আজ আর অবশিষ্ট নেই। দরজার ওপরের ধ্বংসপ্রায় অভিজাত কারুকার্য, দু’পাশে ক্ষয়ে যাওয়া প্রশস্ত দেয়ালের মলিনতায় আজ নীরব হাহাকার!
হয়তো একদিন এই দরজাটির বাঁধা অতিক্রমের জন্যই উন্মুখ ছিল কোন অপরিণত তারুণ্য। হয়তো দরজার ওপাশে ভালোবাসা চাদর মুড়িয়ে অপেক্ষায় ছিল কোন পিয়াসী প্রেয়সী। তবুও বাহিরমহলের বিভাজন দ্বার ডিঙ্গিয়ে অন্তরমহলে প্রবেশাধিকার ছিল না সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম কোনও জাগতিক অনুভূতির। অতৃপ্ত ভালোবাসা হয়তো ডুকরে কেঁদেছে দরজার ওপাশে। আর এপাশে- শান্তি, তৃপ্তি, আভিজাত্য আর আনুগত্যের প্রতীক হয়ে আত্নবিশ্বাসী প্রত্যয়ে ভেতর আর বাইরের সবটুকু মান, অভিমান, দ্বন্দ্ব, বিচ্ছেদের কাহিনী আপাতঃ অন্তরালে রেখেছে এই নীল দরজা।
ক্ষয়িষ্ণুতার সূত্র মেনে বাইরের ঝঞ্জার কাছে হার মেনেছে সে অবশেষে। একটি কপাট আলতো খুলে গেছে হাওয়ার দাপটে। তবুও মুক্তির আনন্দ মেখে ভেতর থেকে বাইরে বেরিয়ে এল না কেউ।
অপ্রাপ্তিতে অভ্যস্থ মৃণালিনী আজ আর ভালোবাসার স্পর্শে পরিপূর্ণ হওয়ার স্বপ্ন দেখে না।
0 Comments