কবিতা আত্মসত্যের মিরর অথবা মিরর পোয়েট্রি

তৈমুর খান on

mirror_poetry

জীবনের জলে আমাদের ছায়া পড়েছে। সেইসব ছায়া আত্মরতির জটিল মুগ্ধতায় বিপন্ন ইশারা । আমাদের কদর্য উল্লাস, অবদমিত আকাঙ্ক্ষার মর্মোচ্ছ্বাসে ফেনায়িত বিধুরতায় প্রবাহিত হয়ে চলেছে। এই সময় আমরা কী কবিতা লিখতে পারি?

যে কবিতা লিখতে পারি তা মিরর পোয়েট্রি। আপন অস্তিত্বের ছিন্ন খণ্ডগুলির আদিমতা, নীরবতা, ভয়ঙ্করতা, ক্রূরতা, আবিলতা, কুশ্রিতা এবং স্বপ্নচারিতাই প্রতিফলিত হয়ে উঠে আসে কবিতায়। কবিতা ছন্দ থেকে ছন্দ হারায়, মাধুর্য থেকে প্রতিহত হয়, বিমুগ্ধতার বদলে বিষণ্ণতা আবিষ্কার করে।কার্ল ক্রাউস(১৮৭৪-১৯৩৬) অনেক আগেই একথা বলেছিলেন মিরর সম্পর্কে :

“The world has become uglier since it began to look into a mirror every day; so let us settle for the mirror image and do without an inspection of the original.”

— Karl Kraus

অর্থাৎ প্রতিদিন যেহেতু আয়নার দিকে নজর দেওয়া শুরু হয়েছে তখন থেকেই বিশ্বটি সুন্দর হয়ে উঠেছে; সুতরাং আসুন আমরা মিরর ইমেজটির জন্য স্থির হয়ে থাকি এবং আসলটি পরীক্ষা না করেই নিজেকে দেখি। পৃথিবীটাই যেখানে আয়না সেখানে তো সব প্রতিবিম্বই হত-কুচ্ছিত হয়ে আমাদের মধ্যে প্রতিফলিত। তখনই তো জীবনানন্দ দাশের ভাষায় বলতে হয় :

“হে নর, হে নারী,
তোমাদের পৃথিবীকে চিনিনি কোনোদিন;
আমি অন্যকোনো নক্ষত্রের জীব নই ।
যেখানে স্পন্দন, সংঘর্ষ, গতি, যেখানে উদ্যম, চিন্তা, কাজ
সেখানেই সূর্য, পৃথিবী, বৃহস্পতি, কালপুরুষ, অনন্ত আকাশ গ্রন্থি,
শত-শত শূকরীর চিৎকার সেখানে,
শত-শত শূকরীর প্রসব বেদনার আড়ম্বর;
এইসব ভয়াবহ আরতি।”
(অন্ধকার)

নিসর্গলোক, মানবলোক প্রকৃতির সমূহ প্রতিবিম্বেই এক ভয়াবহ আরতির দেখা পেয়েছেন। এই ‘মিরর’ বস্তুপৃথিবীর প্রতিচ্ছবিকে অনুভূতির অন্তর্লোকে পৌঁছে দিয়েছে। কদর্য উল্লাসের ভয়ঙ্কর উৎসপাত্রে স্রষ্টাকে নিরন্তর অভিযাপনে প্রবিষ্ট করিয়েছে। এর থেকে কি মুক্তি সম্ভব? কবিতা বহির্লোকের উদ্দীপন থেকে অন্তর্লোকের মর্মচ্ছটায় সৃষ্টির প্রবৃত্তি দান করে। সুতরাং প্রকৃতির মিরর যেখানে ধ্বংসের হাহাকারকে আশ্রয় করে আত্মরূপ সঞ্চার করে, সেখানে মাধুর্যের মিথ্যাচার বা ভ্রম কল্পনাবিলাস মাত্র।

মিরর পোয়েট্রি আজ অন্তরস্থ সত্তারই জাগরণ, যাকে ডক্টর জনসন বলেছেন: ‘The mirror of life’; সিলভিয়া প্লাথ যাকে বলেছেন: ‘Only truthful’ অথবা ‘part of my heart’ আর এই সত্য উদ্ঘাটিত হয় Personified কবিতায়, যে কবিতা বেশিরভাগই সাম্প্রতিক সময়ে লিখিত হচ্ছে। কবির বোধের পৃথিবী তো বলা চলে ‘The world in the mirror of myself dying (Henry Miller :১৮৯১-১৯৮০), তাই মৃত হৃদয়কে জাগাতে চান কবিরা। বস্তু ও হৃদয়ের সংঘর্ষে হৃদয়কেই জয়ী করতে চান। মৃতপৃথিবী যুদ্ধ, রিরংসা, নির্ঘুম, ব্যর্থতা, শূন্যতায় আত্মমহিমাকে, অলৌকিক মাধুর্যকে অদৃশ্য আয়নায় দেখতে চান। ‘আয়না’ শুধুই বস্তুর প্রতিচ্ছবি প্রতিবিম্বিত করতে পারে, কিন্তু জীবনের আয়না বোধের সুতীব্র ভাষাকে আত্মপাঠের ভেতর তুলে ধরতে সক্ষম। Poetry soup Member-দের লিখিত বহু কবিতার মধ্যে তাঁরা একটি ছোট্ট কবিতায় লেখেন:

“I can see a beautiful soul lies within me.
Therefore, no mirror can reflect
Who l really am.”

অর্থাৎ আমি দেখতে পাচ্ছি আমার মধ্যে একটি সুন্দর আত্মা রয়েছে। অতএব, কোনো আয়নাই প্রকৃতপক্ষে কে আমি তা প্রতিফলিত করতে পারে না। অর্থাৎ আয়না হৃদয়কে প্রতিফলিত করতে পারে না , বস্তুকে পারে, প্রকৃত সত্যকে অনুধাবন করতে পারে না, কিন্তু কবিতা পারে। কবিতার আয়না বোধের আয়না। আর একটি Dark Knight Tree নামের কবিতার শেষ অংশে লেখেন:

“I close my eyes
I see them all
The shadows climbing over my soul
The darken deepens
The stars dim my view
Irremovable make up
Land becomes an enemy
I become
The Dark knight trees
Scolding my next victim.”

অর্থাৎ আমি চোখ বন্ধ করে দেখি এগুলি সমস্ত আমারই ছায়ার আত্মা হয়ে উঠছে। আরও গভীরে নক্ষত্রগুলি আমার দৃষ্টিকে অবিচ্ছিন্ন করে।অপসারণযোগ্য স্থলভূমি অগম্য হয়ে যায়। আমি হয়ে যাই অন্ধকার নাইট ট্রি।আমার পরবর্তী শিকারকে ধমক দিতে থাকি। এখানেই অন্তঃস্থিত সত্তারই প্রতিবিম্ব যা উপলব্ধির মাত্রায় নির্ণীত হয়েছে। এখানে বহির্জগৎ অস্পষ্ট অথচ অমোঘ এক বিপন্নতার প্রহরণ উপলব্ধি করেছে। Dark Knight Trees বাংলা কবিতাতেও এই ধারণাটির সীমাহীন প্রয়োগ ঘটে চলেছে। আত্মচরিতের বিভিন্ন অংশে মর্মরিত হচ্ছে এই আত্মখন্ডের বিহ্বলতা ও ক্রন্দন। বস্তু প্রাণের জীবন্ত মহিমায় ব্রহ্মবাদে আশ্রিত হয়ে উঠেছে। কবি তাঁর বোধের আয়নায় নিগূঢ় আত্মরূপেন সংস্থিতায় প্রতিফলিত হচ্ছেন। মিরর পোয়েট্রি তো সেই যন্ত্রণার, সেই না বলার, সেই শূন্যতারও ভাষা বা প্রতিচ্ছায়া হয়ে উঠেছে, যার মধ্যে প্রতিস্বকেই খুঁজে পাওয়া যায়। এই সময়ের কয়েকজন উল্লেখযোগ্য কবির কবিতায় এই প্রতিস্ব কখনো প্রাণের উত্তাপ পেয়েছে, কখনো আবহমান সময়ের ঐতিহাসিক মিররে অভিজ্ঞতার ভাষা এনে দিয়েছে।

১। রেহান কৌশিক ‘কথা’ কবিতায় যখন লিখলেন:

“সেই কত জন্ম আগে ছাড়িয়েছি সূচনার বীজ
চাকা আর আগুনের সমস্ত প্রসার
খোদাই করেছি মাটি ও আগুনে।
খোলা আকাশের নিচে
জল ও জমিন জুড়ে রেখে গেছি শিকারের শ্লোক,
কৃষির কাহিনি…..
জানা কি ফুরোয় তবু! শেষ হয় সমস্ত সন্ধান!”

এই মিরর সভ্যতার উৎস ও উত্থানকে তুলে ধরল, সেই সঙ্গে কবির বহুমাত্রিক জন্মসত্তার ক্রিয়াটি যার মধ্যে আগুন-জ্বালা, কৃষি সভ্যতা, শিকার ও কাব্যশ্লোকের নিরন্তর যাত্রাটির ছবি দেখা গেল। এই ছবি আবহমান বলেই কোনোদিন পুরোনো হয় না। Kahlil Giban (১৮৮৩-১৯৩১) এই কারণে মিররকে বলেছিলেন: Beauty is eternity gazing at itself in a mirror. অর্থাৎ সৌন্দর্য চিরন্তন আয়নায় নিজেকেই দ্যাখে। মানুষ তখনই তো অমৃতের সন্তান।

২। কানাইলাল জানা ‘কথা’ কবিতায় যখন লিখলেন :

“মরা নদী খুব মন দিয়ে আমার কথা শোনে, ভাঙা সাঁকো, শীর্ণ দেয়াল, জীর্ণ বাড়িও খুব মন দিয়ে আমার দুঃখের কাহিনি শোনে। বয়স বাড়লে মানুষের দাম বাড়ে নয়তো তার ওজন হাওয়ায় ওঠে। এত কাল আমরা এত কথা বলেছি যে, তার ভার সইতে পারছে না পৃথিবী। এবার আমাদের থামার পালা। বরং আকাশ বাতাস সমুদ্র অনেক অনেক দরকারি কথা বলুক, এই পৃথিবী ছুঁয়ে তাদের কথা চলে যাক মঙ্গলগ্রহ অবধি….”

মরা নদী, ভাঙা সাঁকো, শীর্ণ দেয়াল, জীর্ণ বাড়ির সমূহ প্রতিবিম্ব যে The dying world তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু তাদের মাঝেই নিজের অস্তিত্বকে দেখতে পান কবি। নিজের প্রতিস্ব দুঃখময় কাহিনির আকর । সুতরাং The mirror of myself dying অর্থাৎ আমার মনের আয়নাও। সেখানেই নীরবতা বা স্তব্ধতার এক সদর্থক রূপ খুঁজতে চেয়েছেন। যা প্রাকৃতিক যা সাবলীল কৃতার্থের হয়ে উঠবে। তাই আকাশ বাতাস সমুদ্রে তারই ব্যঞ্জনার আভাস অনুমিত হয়েছে। যেখানে একাকিত্ব জীবনের ডাকই ছবি হতে পারে।যা Eugene O’Neill (১৮৮৮-১৯৫৩) এর কথায় বলা যেতে পারে: ‘Life is for each man and solitary cell whose walls are Mirrors.’ অর্থাৎ প্রতিটি মানুষের জীবনে নির্জন কক্ষের দেয়ালগুলিই তার আয়না। মানুষের একাকিত্বের জেলখানার দেওয়ালে তখন ফুটে ওঠে নিজের জীবনের এই ছবি। বোধের নিগূঢ় উপলব্ধির সামীপ্য এনে দেয় এখানেই।

৩। সনৎ সেন ‘ছায়া’ নামের একটি ছোট্ট কবিতার শেষাংশে লেখেন :

“এক সময় গভীর রাতের বাজার শেষে
আমার পাশ বালিশে মাথা রেখে নিঃশ্বাস
ফেলে গভীর, সে ছায়া কখনও স্বপ্ন দেখে
আর নিঝুম বারান্দায় লেখে নিজস্ব পান্ডুলিপি।”

এই ছায়া বা Shadow-ই তো জীবন। কার্লাইল বলেছেন :

“Man always worships something; always he sees the Infinite shadowed forth in something finite; and indeed can and must so see it in any finite thing, once tempt him well to fix his eyes thereon.”

— Thomas Carlyle

অর্থাৎ মানুষ সর্বদা কিছু উপাসনা করে; সর্বদা তিনি সীমিত কিছুতে ছায়াযুক্ত অসীম দেখতে পান; এবং প্রকৃতপক্ষে এটি অবশ্যই কোনো সীমাবদ্ধ জিনিসটিতে দেখে থাকেন , তার দৃষ্টিভঙ্গিই তাকে প্রলুব্ধ করে। যে ছায়ার নিঃশ্বাস শোনা গেছে তা সেই ব্যক্তিজীবনের নিগূঢ় অন্তঃসার। কবিতার পান্ডুলিপি তো সেই প্রতিস্বই লিখে চলে অবিরত। Ernest Holmes এই কারণেই বলেছেন :

‘Life is a mirror and will reflect back to the thinker what he thinks into it.’

Ernest Holmes

অর্থাৎ জীবন একটি আয়না এবং চিন্তক তার মধ্যে কী চিন্তা করে তা এতে প্রতিবিম্বিত করবে। কবিতা জীবনকে বাদ দিয়ে নয়, জীবনের ভাঙা-গড়া, দীর্ঘশ্বাস কবিতাতেই বেজে ওঠে।

৪। কবি সেখ রমজান ‘অরণ্যলিপি’ নামের একটি ছোট্ট কবিতায় লিখলেন:

“জঙ্গলের ভিতর থেকে অন্য এক জঙ্গলের ছবি
ভিন্ন অরণ্য স্বাদ, বহুদুর অন্তঃশীলা দুর্নিবার টানে
অন্ধকার কথা বলে, আলো হাত রাখে ওইখানে
ওইখানে গন্ধস্রোত, বিচিত্র পল্লবধ্বনি শিশিরের
স্নান আমরা যাব না কেন ? খুলে রাখি পট্টবস্ত্র
আর শিরস্ত্রাণ”

অরণ্যের ছায়ায় ঢাকা থাকে আর এক অরণ্য, যে অরণ্য আদিম অথবা প্রাগৈতিহাসিক কালের সংবাদ দেয়। সভ্যতা, যুদ্ধ, সাম্রাজ্য যেমন উত্থান লাভ করে, তেমনি অরণ্যস্বাদ ভিন্নতর জীবনবোধের তীব্রতা নিয়ে বিরাজ করে। কবিকে সে কথা-ই লিখতে হয় : ‘অন্ধকার কথা বলে’ এবং ‘আলো হাত রাখে’ বলে। গন্ধস্রোতের মাদকতায় প্রাচীন সেই অরণ্যচারীর অবিন্যস্ত ছায়া মনে পড়ে যায়। আমাদের জীবনের তো দুটি পথ: একটি অন্ধকারের আদিমতায় সমাচ্ছন্ন, নিগূঢ় অন্তঃশীল; অন্যটি আলোর, সভ্যতার, মানব মহিমা প্রকাশের। Edith Wharton এই আলোর কথা বলতে গিয়ে সেই মিররকেই দেখতে পান : ‘There are two ways of spreading light; to be the candle or the mirror that reflects it,’ অর্থাৎ আলো ছড়িয়ে দেওয়ার দুটি উপায় রয়েছে ; মোমবাতি বা আয়না যা এটি প্রতিফলিত করে। এই ‘Candle’ যে জ্ঞান বা প্রজ্ঞারই প্রকাশ এবং ‘Mirror’ যে প্রতিফলিত আত্মস্বরূপের নির্ণয় তা বলাই বাহুল্য।

৫। মলয় গোস্বামীর ‘কুয়াশা’ নামের একটা টুকরো কবিতায় ছায়াবাদের প্রকাশ জীবন্ত হয়ে উঠেছে। যখন কবিতাটির শেষ ক’লাইনে তিনি লিখলেন :

“পাড়া ঘুরে, অনেক মাস্টারমশাই-এর সঙ্গে গল্প করে
বাড়ি ঢুকছি…. দরজা বন্ধ….
কেবল কুকুর-কুকুর মনে হয় নিজেকে
ঠিক বোঝা যায় না….”

নিজের ছেলে যখন গর্হিত কাজ করে, প্রেম করে যখন কোনো কুমারীর মৃত্যুর কারণ হয়, তখন ‘বাবা-সত্তা’র বিবেকে কুঠারাঘাত পড়ে। সেই বিবেকের জাগরণেই নিজের কুকুর অভিমুখটি বেরিয়ে আসে। আর সেই সভ্যতাচারী মাস্টারমশাই হয়েও অন্ধকার পশুসত্তার সামীপ্য অর্জন করেন। inferiority complex অর্থাৎ হীনমন্যতার ছবিটি অন্তঃশীল মিরর ঠিকভাবে তুলে ধরতে পেরেছে। জীবনের জটিল চেতনায় কখনো কখনো এরকম বোধও উঠে আসতে পারে, মানুষ নিজেও কুকুর রূপে নিজেকে দ্যাখে, তেমনি অন্যকেও দেখতে পারে। বিখ্যাত লেখক Rainer Maria Rilke (1875-1926) কুকুরের সেই ছবিটির প্রতি ইঙ্গিত করেই লিখেছিলেন :

“He reproduced himself with so much humble objectivity, with the unquestioning, matter of fact interest of a dog who sees himself in a mirror and thinks: there’s another dog.”

—Rainer Maria Rilke

অর্থাৎ তিনি নিজেকে এতটা বিনীত অবাস্তবতার সাথে পুনরুৎপাদ করেছিলেন, প্রশ্নহীন, বাস্তবতার সাথে কুকুরের আগ্রহ যা নিজেকে আয়নায় দেখে তিনি মনে করেন আরও একটি কুকুর রয়েছে। মানব মনের অন্ধকার প্রতিস্ব কীরূপে কখন প্রতিফলিত হয় তা মিররেও প্রতিফলিত হতে বাধ্য। ব্যক্তি মানুষের জীবনের নানা শূন্যতা, অপরাধপ্রবণতা, প্রেমের প্রত্যাখ্যান এবং লোভ ও জিঘাংসা প্রবৃত্তির ছায়া হামেশাই উঠে আসে। কবিতা সূক্ষ্ম এক জীবনবোধ ও মননের ক্রিয়াকে আশ্রয় করেই লেখা হতে থাকে। সেখানে সাদাপাতা, কাটাকুটি খেলা, কিংবা রূপক ও প্রতীকের নানা ব্যবহার থাকলেও তাই-ই যে মনের ভাষা, আত্মস্বরূপের উন্মোচন, এবং আত্মসত্যের ছায়াবৃত্ত, সৎ-কবিতার ক্ষেত্রে একথা সব কবিই মানতে বাধ্য।

সাম্প্রতিককালে যত মৃত্যু-মিছিল হতাশা ও ভাঙন আমাদের আক্রান্ত করছে, এই মিরর পোয়েট্রিও ততই লেখা হচ্ছে। পৃথিবীর প্রায় সমস্ত কবিই এই ধরনের কবিতা রচনা করেছেন। তবে আজকের কবিতা পুনরাধুনিক বলে মিররের ছবিতে আরও জটিল রূপের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। এলিয়টের দা হলো ম্যান, আলফ্রেড প্রুফ্রকও মিরর পোয়েট্রির সত্যতা নিয়ে জেগে আছে। আমাদের ক্লান্ত বিষণ্ণ সত্তার বিধ্বস্ত ছিন্ন রূপকেই কবিতার আয়নায় দেখে চলেছি।


ফেসবুক অ্যাকাউন্ট দিয়ে মন্তব্য করুন


তৈমুর খান

তৈমুর খান নব্বই দশকের কবি হিসেবেই পরিচিত। তাঁর কবিতায় জীবনযাপনের নানা মুহূর্ত উঠে এসেছে। মূলত প্রেম ও বিষাদের তীব্র অভিঘাত । শব্দ ব্যবহারে ও চিত্রকল্পের ব্যাপ্তিময় প্রয়োগে কবির অসাধারণ দক্ষতা চোখে পড়ে। উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ হল :বৃত্তের ভেতরে জল, জ্যোৎস্নায় সারারাত খেলে হিরণ্য মাছেরা, নির্বাচিত কবিতা, উন্মাদ বিকেলের জংশন, স্তব্ধতার ভেতর এক নিরুত্তর হাসি, নির্ঘুমের হ্রস্ব ধ্বনি, কাহার অদৃশ্য হাতে, ইচ্ছারা সব সহমরণে যায়, আকাঙ্ক্ষার ঘরের জানালা ইত্যাদি ।পুরস্কার পেয়েছেন :নতুন গতি সাহিত্য পুরস্কার। ঠিকানা :রামরামপুর (শান্তিপাড়া), রামপুরহাট, বীরভূম।

1 Comment

জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় · আগস্ট 30, 2020 at 3:28 অপরাহ্ন

ভালো লাগল।

মন্তব্য করুন

Avatar placeholder

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।